নবজাতক জন্মের পর করণীয়: আপনার শিশুর যত্নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
নবজাতক শিশুর জন্মের পর তার যত্ন নেওয়া প্রতিটি বাবা-মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতকের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে হলে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এখানে নবজাতক শিশুর জন্মের পর করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো:
১. ত্বকের সাথে ত্বক যোগাযোগ
শিশুর জন্মের পরপরই তাকে মায়ের ত্বকের সাথে যোগাযোগ করানো উচিত। এটি নবজাতকের জন্য উষ্ণতা প্রদান করে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে সাথে মায়ের সাথে সংযোগ তৈরিতে সহায়তা করে। এটি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
২. প্রথম দুধ খাওয়ানো
শিশুর জন্মের পর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত। মাতৃদুগ্ধ শিশুর জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং এটি নবজাতকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া, মাতৃদুগ্ধ শিশুর প্রথম খাবার হওয়া উচিত কারণ এটি শিশুর জন্য প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
৩. নবজাতকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
নবজাতকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাকে অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করতে হবে। সাধারণত নবজাতককে একটি হালকা কম্বলে মোড়ানো উচিত এবং মাথায় একটি হ্যাট পরানো উচিত।
৪. নবজাতকের চোখের যত্ন
নবজাতকের চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধে তাকে জন্মের পরপরই চোখের যত্ন নেওয়া উচিত। এর জন্য চিকিৎসকরা সাধারণত বিশেষ কিছু চোখের ড্রপ দিয়ে থাকেন।
৫. নবজাতকের আঙ্গুল ও নখ পরীক্ষা
নবজাতকের আঙ্গুল ও নখ পরীক্ষা করা উচিত। শিশুর নখ যদি বড় হয়, তবে তা ছোট করে কাটতে হবে যাতে শিশুর মুখ বা শরীরের অন্য কোন স্থানে আঘাত না লাগে।
৬. নবজাতকের নাভির যত্ন
নবজাতকের নাভির যত্ন নিতে হবে। নাভির চারপাশের স্থান শুকিয়ে যাওয়া এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পরিষ্কার এবং শুকনো রাখা উচিত।
৭. নবজাতকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ
নবজাতকের জন্মের পর প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা শিশুর শারীরিক অবস্থার মূল্যায়ন করে এবং প্রয়োজনীয় টিকাদান ও পরামর্শ প্রদান করে।
আরো পড়ুন : নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা
৮. নবজাতকের সঠিক ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করা
নবজাতকের সঠিক ঘুমের জন্য শান্ত, উষ্ণ এবং নিরাপদ একটি পরিবেশ তৈরি করা উচিত। তাকে নিরাপদ অবস্থানে (প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী চিত হয়ে) শুয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুর ঘুমের সময় বিছানায় ভারী জিনিস বা অতিরিক্ত কিছু রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নবজাতকের জন্য এই পদক্ষেপগুলো মেনে চলা তাদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত, নবজাতকের যত্নে সচেতন থাকা এবং তাদের সঠিকভাবে লালন-পালন করা।
Comments
Post a Comment