কানে ব্যথা কেন হয়? সম্ভাব্য কারণ এবং করণীয়।


কানে ব্যথা (Earache) একটি সাধারণ সমস্যা যা ছোট থেকে বড় সবার মধ্যেই দেখা যায়। এটি সাধারণত কিছুক্ষণের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করে, তবে কখনও কখনও এটি একটি গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। কানে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নিচে কিছু সম্ভাব্য কারণ এবং করণীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. কানের সংক্রমণ (Otitis Media)

কানের সংক্রমণ হলো কানে ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে এবং শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। সংক্রমণের কারণে কানের মধ্যে প্রদাহ হতে পারে, যা ব্যথা সৃষ্টি করে।

২. কানের ভেতরে ময়লা জমা (Earwax Build-up)

কানের ভেতরে ময়লা বা ইয়ারওয়াক জমে গেলে কানে ব্যথা হতে পারে। ইয়ারওয়াক সাধারণত কানকে সুরক্ষা দেয়, কিন্তু যখন এটি অতিরিক্ত পরিমাণে জমে যায়, তখন ব্যথা, খিঁচুনি এবং শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

৩. কানের ভেতরে পানি ঢোকা

সাঁতার কাটার সময় বা গোসলের সময় কানের ভেতরে পানি ঢুকে গেলে ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে যদি পানির সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস প্রবেশ করে, তাহলে সংক্রমণ হতে পারে এবং এর ফলে কানে তীব্র ব্যথা হতে পারে।

৪. সাইনাসের সমস্যা (Sinusitis)

সাইনাসের সংক্রমণ বা সাইনোসাইটিস কানে ব্যথার কারণ হতে পারে। যখন সাইনাসে প্রদাহ হয়, তখন তা কানের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যথা হতে পারে।

৫. দাঁতের সমস্যা (Toothache)

কখনও কখনও দাঁতের ব্যথা কানে প্রতিফলিত হতে পারে। দাঁতের সংক্রমণ বা দাঁতের মাড়ির রোগ (Gum disease) কানের ব্যথার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন সমস্যা জড়িত দাঁত কানের কাছাকাছি থাকে।

৬. কানের আঘাত

কানের কোন অংশে আঘাত লাগলে, বা কান পরিষ্কার করার সময় কোনো তীক্ষ্ণ বস্তু দিয়ে কান খোঁচানো হলে কানের ভেতরের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ব্যথা শুরু হতে পারে।

৭. টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট ডিজঅর্ডার (TMJ Disorder)

টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট হলো আপনার কানের পাশে অবস্থিত একটি জয়েন্ট যা আপনার চোয়ালকে খুলতে এবং বন্ধ করতে সহায়তা করে। এই জয়েন্টে কোনো সমস্যা হলে, তা কানে ব্যথার কারণ হতে পারে।

করণীয়

কানে ব্যথা হলে প্রথমেই মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। কানের ব্যথা যদি মৃদু হয় তবে সাধারণত কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে এটি কমে যায়। তবে যদি ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক সঠিক কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা প্রয়োগ করতে পারবেন।

সাধারণত কানে সংক্রমণ বা অন্যান্য সমস্যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কানের ময়লা পরিষ্কার করা বা সাইনাসের সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

আরো পড়ুন : নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • কানের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত কানের পরিচর্যা করুন এবং কানে কোনো তীক্ষ্ণ বস্তু ঢোকানো থেকে বিরত থাকুন।
  • সাঁতার কাটার সময় কান ঢেকে রাখার জন্য ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করুন।
  • ঠান্ডা ও সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে সঠিক পোশাক পরিধান করুন এবং কোল্ড ড্রিঙ্ক থেকে বিরত থাকুন।

কানে ব্যথা সাধারণত বিপজ্জনক নয়, তবে এটি যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে জটিলতা বাড়তে পারে। তাই কানের ব্যথা অনুভব করলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Comments

Popular posts from this blog

What Are Atypical Thoracic Vertebrae?

Understanding the Typical Thoracic Vertebrae

What is Diabetes Mellitus? A Simple Guide You Can Trust