শিশুদের ছয়টি মারাত্মক রোগের নাম কী কী? জানুন বিস্তারিতভাবে
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের তুলনায় অনেক দুর্বল। তাই তারা সহজেই বিভিন্ন সংক্রামক এবং মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এই কারণে অভিভাবকদের উচিত শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার-এর পরামর্শ নেওয়া।
এই
ব্লগে
আমরা
আলোচনা
করবো:
- শিশুদের সবচেয়ে মারাত্মক
৬টি রোগ
- লক্ষণ ও প্রতিকার
- প্রতিরোধের
উপায়
শিশুদের ৬টি মারাত্মক রোগ
১. ডিপথেরিয়া (Diphtheria)
ডিপথেরিয়া হলো
একটি
ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ
যা
গলা
এবং
শ্বাসনালীতে আক্রমণ
করে।
লক্ষণ:
- গলা ব্যথা
- গলায় সাদা আবরণ
- জ্বর ও দুর্বলতা
- শ্বাসকষ্ট
প্রতিরোধ: DPT টিকা শিশুদের এই
মারাত্মক রোগ
থেকে
রক্ষা
করে।
২. হুপিং কাশি (Pertussis)
এটি
একটি
তীব্র
কাশি
রোগ,
যা
শিশুর
জন্য
মারাত্মক হতে
পারে।
লক্ষণ:
- ঘন ঘন কাশি
- কাশির পর দীর্ঘ নিঃশ্বাসের
শব্দ
- বমি হওয়া
- দুর্বলতা
প্রতিরোধ: DPT টিকার মাধ্যমেই এটি
প্রতিরোধ করা
সম্ভব।
৩. টেটানাস (Tetanus)
একটি
মারাত্মক স্নায়ুজনিত রোগ,
যা
ইনফেকটেড কাটা-ছেঁড়া, পঁচা নখ
বা
ধুলোবালির মাধ্যমে শরীরে
প্রবেশ
করে।
লক্ষণ:
- পেশির শক্ত হয়ে যাওয়া
- মুখ খুলতে সমস্যা
- ঝাঁকুনি বা খিঁচুনি
প্রতিরোধ: নিয়মিত টেটানাস টিকা
ও
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা।
৪. পোলিও (Poliomyelitis)
এটি
শিশুদের পঙ্গু
করে
দিতে
পারে
এমন
একটি
ভাইরাসজনিত রোগ।
লক্ষণ:
- জ্বর
- মাথাব্যথা
- পেশিতে দুর্বলতা
- হঠাৎ পা নড়াচড়া
বন্ধ হয়ে যাওয়া
প্রতিরোধ: পোলিও টিকা।
৫. হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B)
লিভার
আক্রান্তকারী ভাইরাস,
শিশুর
শরীরে
জন্মের
সময়
অথবা
ইনজেকশন-রক্তের
মাধ্যমে ছড়াতে
পারে।
লক্ষণ:
- জ্বর
- বমি
- পেট ব্যথা
- চেহারা হলুদ হয়ে যাওয়া
প্রতিরোধ: জন্মের পরপরই
হেপাটাইটিস বি
টিকা
দেওয়া
উচিত।
৬. হাম (Measles)
এটি
একটি
ভাইরাসজনিত রোগ
যা
দ্রুত
ছড়ায়
এবং
জটিলতা
সৃষ্টি
করতে
পারে।
লক্ষণ:
- উচ্চমাত্রার
জ্বর
- শরীরে লাল দাগ
- চোখ লাল হওয়া
- কাশি ও নাক দিয়ে পানি পড়া
প্রতিরোধ: এমআর (Measles-Rubella) টিকা শিশুকে
রক্ষা
করে।
প্রতিরোধের উপায়
✅ জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি (EPI) অনুসরণ করুন
✅ শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন
✅ সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন
✅ শিশুর পুষ্টির দিকে নজর দিন
✅ জন্মের পরপরই টিকা দিন ও ফলোআপ নিশ্চিত করুন
কখন যাবেন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে?
যদি
আপনার
শিশুর:
- জ্বর ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয়
- ঘন ঘন কাশি, শ্বাসকষ্ট,
বা খিঁচুনি হয়
- খাওয়ায় অরুচি দেখা যায়
- শরীরে র্যাশ বা ফুসকুড়ি হয়
- ওজন কমে যায় বা স্বাভাবিক
বৃদ্ধি থেমে যায়
তবে
দেরি
না
করে
দ্রুত
একজন
শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার-এর
পরামর্শ নেওয়া
জরুরি।
উপসংহার
শিশুর
জীবনের
প্রথম
পাঁচ
বছর
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ। এ
সময়টাতে নানা
ধরনের
মারাত্মক রোগে
আক্রান্ত হওয়ার
ঝুঁকি
থাকে।
তবে
সময়মতো
টিকা,
সচেতনতা এবং
সঠিক
চিকিৎসা শিশুর
সুস্থতা নিশ্চিত করতে
পারে।
আপনার
সন্তান
যেন
সুস্থভাবে বেড়ে
ওঠে,
সেটিই
সবচেয়ে
বড়
প্রাপ্তি।

Comments
Post a Comment